কারো সঙ্গে যুদ্ধ নয়, সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনীকে গড়ে তোলা হচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী
- আপডেট সময় : ১১:২৯:৫১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ মার্চ ২০২৩ ৬৪ বার পড়া হয়েছে

প্রধানমন্ত্রী ‘বানৌজা শেখ হাসিনা’ ঘাঁটিতে ভিডিও টেলিকনফারেন্সে সংযুক্ত হলে নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম শাহীন ইকবাল তাকে স্যলুট প্রদান করেন : ছবি আইএসপিআর
‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়’, জাতির পিতার দিয়ে যাওয়া পররাষ্ট্রনীতি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সেই নীতিতেই বিশ্বাস করি, আমরা কারো সঙ্গে যুদ্ধ করতে চাই না। তবে, আমাদের প্রতিটি প্রতিষ্ঠান স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের প্রতীক, তারা সকল ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জন করুক সেটাই আমরা চাই।
অনলাইন ডেস্ক
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকার সশস্ত্র বাহিনীকে এমনভাবে গড়ে তুলছে যাতে বাংলাদেশ কোনভাবে আক্রান্ত হলে তারা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে পারে। আমরা কারো সঙ্গে যুদ্ধ করবো না। তবে, যদি কখনো তেমন পরিবেশ-পরিস্থিতি হয় তাহলে যেন আমরা দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে পারি, সেইভাবে আমাদেরও দক্ষতা অর্জন করতে হবে এবং সেইভাবেই আমরা আমাদের বাহিনীগুলোকে তৈরী করে দিচ্ছি।
সোমবার অপরাহ্নে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর নবনির্মিত ‘বানৌজা শেখ হাসিনা’ সাবমেরিন ঘাঁটির কমিশনিং অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কক্সবাজারের পেকুয়ায় নবনির্মিত ঘাঁটির সঙ্গে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়’, জাতির পিতার দিয়ে যাওয়া পররাষ্ট্রনীতি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সেই নীতিতেই বিশ^াস করি, আমরা কারো সঙ্গে যুদ্ধ করতে চাই না। তবে, আমাদের প্রতিটি প্রতিষ্ঠান স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের প্রতীক, তারা সকল ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জন করুক সেটাই আমরা চাই।
এসময় নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম শাহীন ইকবাল ঘাঁটির অধিনায়ক কমডোর মোহাম্মদ আতিকুর রহমান এর হাতে কমিশনিং ফরমান তুলে দেন এবং নৌবাহিনীর রীতি অনুযায়ী আনুষ্ঠানিকভাবে নামফলক উন্মোচন করেন। এর মধ্য দিয়ে ঘাঁটিটি নৌবাহিনীতে আনুষ্ঠানিকভাবে অপারেশনাল কার্যক্রম শুরু করল।
বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে একটি আধুনিক, যুগোপযোগী ও ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনী হিসাবে রুপান্তরে সাবমেরিন সংযোজন ছিল স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের সামরিক শক্তি বৃদ্ধিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। সংবেদনশীল ও কৌশলগত রণতরী হিসেবে সাবমেরিন এর সর্বোত্তম ব্যবহার ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে একটি বিশেষায়িত ও স্থায়ী ঘাঁটির গুরুত্ব বিবেচনায়, বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রীর অনুপ্রেরণা, ঐকান্তিক আগ্রহ ও প্রচেষ্টায় গত ১২ মার্চ ‘বানৌজা শেখ হাসিনা’ নির্মাণে ঘাঁটির নামফলক উন্মোচিত হয়।
কমিশনিং অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে একটি আধুনিক শক্তিশালী ও সক্ষম নৌবাহিনী গঠনে বর্তমান সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরেন। সমুদ্রের অফুরন্ত প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় তিনি নৌবাহিনীর আধুনিকায়নের গুরুত্ব তুলে ধরেন। বাংলাদেশের সামুদ্রিক সম্পদ রক্ষা ও দুর্যোগ মোকাবেলায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে আধুনিক ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনীর স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি তা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন।
জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে একটি আধুনিক শক্তিশালী নৌবাহিনী গড়ে তুলতে সরকারের দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এ বিষেশায়িত ঘাঁটি সংযোজিত হয়েছে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশের জলসীমা সুরক্ষায় নৌবাহিনীর সাবমেরিনসমূহের অপারেশনাল সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে এ ঘাঁটির গুরুত্ব অপরিসীম। এছাড়া, দেশের সার্বভৌমত্ব, সমুদ্রসীমার নিরাপত্তা রক্ষা ও চলমান অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা পালনের জন্য নৌবাহিনীর সদস্যদের কঠোর পরিশ্রম ও কর্তব্য নিষ্ঠার জন্য তিনি আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
এর আগে, প্রধানমন্ত্রী ‘বানৌজা শেখ হাসিনা’ ঘাঁটিতে ভিডিও টেলিকনফারেন্সে সংযুক্ত হলে নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম শাহীন ইকবাল তাকে স্বাগত জানান। এসময় সাবমেরিনারদের একটি চৌকস দল প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার প্রদান করে। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে মন্ত্রীবর্গ, সংসদ সদস্যবৃন্দ, মুক্তিযোদ্ধা নৌ কমান্ডোগণ, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, নৌ সদর দপ্তরের পিএসওগণ, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এবং উর্ধ্বতন সামরিক ও অসামরিক কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।