ঢাকা ১১:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫, ১২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

করোনার টিকা উৎপাদনের খাতায় নাম লিখালো বাংলাদেশ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:০১:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ এপ্রিল ২০২১ ১৮৫ বার পড়া হয়েছে
ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ঋদ্ধিমান, ঢাকা

সেদিন আর দূরে নয়। দরুন হাতে গোণা মাস দু’য়েক। তারপরই করোনার টিকার গায়ে লেখা থাকবে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’। রাশিয়া ও চীনের প্রযুক্ত কিনে লালসবুজেখচিত পতাকায় মোড়া বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের টিকা (ভ্যাকসিন) উৎপাদনের নীতিগতও অনুমোদ মিলেছে। যত সম্ভব দ্রুত টিকা উৎপাদনের কাজ শুরু করতে বলা হয়েছে। ‘শেখ হাসিনার ঘোষণা’ তার দেশের মানুষকে রক্ষায় যা যা করণীয় তার সবটাই করতে প্রস্তুত। পৃথিবীর যেকোন প্রান্ত থেকে করোনার টিকা সংগ্রহের মাথা উচু ঘোষণা আগেই দিয়েছিলেন। আর এবারে করোনার টিকা তৈরির খাতায় নাম লিখানোর পথে হাটলেন তিনি।

বাংলাদেশ টিকা উৎপাদন করবে এটা তেমন আশ্চর্য হবার বিষয় নয়। স্বাভাবিক ঘটনা। এটি এখন আর স্বপ্ন নয়, বাস্তব। পঞ্চাশ বছরের আগের বাংলাদেশ এখন অতীত। এখানের অর্থনীতি মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে। আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থায় রাতারাতি পণ্যপরিবাহিত হচ্ছে, দেশের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে। খড়স্রোতা পদ্মায় সেতুর কাজ সম্পন্ন। মহাকাশে স্যাটেলাই, জলের তলায় সাবমেরিন পুরানো বার্তা।

গভীরসমুদ্র বন্দর এশিয়ার অর্থনৈতিক সাব। বে-টার্মিনাল, কর্ণফুলি নদীর তলদেশে টানেল, এশিয়ান অন্যতম ‘বঙ্গবন্ধু রপ্তানি জোন’ এগুলো সবই উন্নয়নের মাইল ফলকে পরিণত হয়েছে। সেই দেশ করোনার টিকা তৈরি করবে, এটাতো স্বাভাবিক।

এবারের করোনার টিকা নিয়ে আলোচনার টেবিলে বসা নয়। সরসরি উৎপাদন প্রক্রিয়ায় হাত লাগাতে অনুমোদনও দিয়ে দিয়েছে দেশটির অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। বুধবার রাশিয়া ও চীনের টিকা উৎপাদনের নীতিগত অনুমোদন দেয়ার কথা জানালেন, অর্থমন্ত্রী আ হম মুস্তফা কামাল।

এর আগে মঙ্গলবার বাংলাদেশ সফর করেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেনারেল ওয়েই ফিংহে। তিনি রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতকালে বলেছেন, তার দেশ করোনা মোকবেলায় বাংলাদেশকে সার্বিক সহযোগিতা করতে চায়। এসময় রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেন, বাংলাদেশ-চীন যৌথভাবে করোনা ভ্যাকসিন উৎপাদনে আগ্রহী। তার পরদিনই রাশিয়া-চীনের করোনা ভ্যাকসিন উৎপাদনে নীতিগত সিদ্ধান্ত দিল মন্ত্রীসভা কমিটি।

অর্থমন্ত্রী বলেন, টিকা কেনা এবং বিকল্প সোর্স থেকেও সংগ্রহের চেষ্টা চলছে। প্রথম সোর্সও আমরা বাতিল করিনি। বিকল্প হিসেবে রাশিয়া ও চীনের প্রযুক্তি কিনে স্পুটনিক-ভি ও ‘সিনোভ্যাক’ বাংলাদেশে উৎপাদনে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটি। অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অর্থনৈতিক বিষয়ক সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ভার্চ্যুয়াল বৈঠকে প্রস্তাব দুটো অনুমোদন পায়।

বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. শাহিদা আক্তার জানান, জরুরি প্রয়োজনে রাশিয়ার স্পুটনিক-ভি ও চীনের ‘সিনোফার্ম’ থেকে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি অনুসরণ করে বাংলাদেশে ভ্যাকসিন উৎপাদনের প্রস্তাবটি নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে করোনা ভ্যাকসিন উৎপানের বিষয় নিয়ে রাশিয়া এবং চীনের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।

কারিগরি ও পরামর্শক কমিটির সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। তারাও আলোচনা করেছেন। তারপরই এ বিষয়ে সম্মতি দেওয়া হয়েছে। খুব শিগগিরই কার্যক্রম শুরু হবে। বাংলাদেশ ও চীন দু’পক্ষই এটি উৎপাদনে একমত হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব বাংলাদেশে টিকা উৎপাদন শুরুর তাগিদ দেওয়া হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

করোনার টিকা উৎপাদনের খাতায় নাম লিখালো বাংলাদেশ

আপডেট সময় : ০৯:০১:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ এপ্রিল ২০২১

ঋদ্ধিমান, ঢাকা

সেদিন আর দূরে নয়। দরুন হাতে গোণা মাস দু’য়েক। তারপরই করোনার টিকার গায়ে লেখা থাকবে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’। রাশিয়া ও চীনের প্রযুক্ত কিনে লালসবুজেখচিত পতাকায় মোড়া বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের টিকা (ভ্যাকসিন) উৎপাদনের নীতিগতও অনুমোদ মিলেছে। যত সম্ভব দ্রুত টিকা উৎপাদনের কাজ শুরু করতে বলা হয়েছে। ‘শেখ হাসিনার ঘোষণা’ তার দেশের মানুষকে রক্ষায় যা যা করণীয় তার সবটাই করতে প্রস্তুত। পৃথিবীর যেকোন প্রান্ত থেকে করোনার টিকা সংগ্রহের মাথা উচু ঘোষণা আগেই দিয়েছিলেন। আর এবারে করোনার টিকা তৈরির খাতায় নাম লিখানোর পথে হাটলেন তিনি।

বাংলাদেশ টিকা উৎপাদন করবে এটা তেমন আশ্চর্য হবার বিষয় নয়। স্বাভাবিক ঘটনা। এটি এখন আর স্বপ্ন নয়, বাস্তব। পঞ্চাশ বছরের আগের বাংলাদেশ এখন অতীত। এখানের অর্থনীতি মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে। আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থায় রাতারাতি পণ্যপরিবাহিত হচ্ছে, দেশের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে। খড়স্রোতা পদ্মায় সেতুর কাজ সম্পন্ন। মহাকাশে স্যাটেলাই, জলের তলায় সাবমেরিন পুরানো বার্তা।

গভীরসমুদ্র বন্দর এশিয়ার অর্থনৈতিক সাব। বে-টার্মিনাল, কর্ণফুলি নদীর তলদেশে টানেল, এশিয়ান অন্যতম ‘বঙ্গবন্ধু রপ্তানি জোন’ এগুলো সবই উন্নয়নের মাইল ফলকে পরিণত হয়েছে। সেই দেশ করোনার টিকা তৈরি করবে, এটাতো স্বাভাবিক।

এবারের করোনার টিকা নিয়ে আলোচনার টেবিলে বসা নয়। সরসরি উৎপাদন প্রক্রিয়ায় হাত লাগাতে অনুমোদনও দিয়ে দিয়েছে দেশটির অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। বুধবার রাশিয়া ও চীনের টিকা উৎপাদনের নীতিগত অনুমোদন দেয়ার কথা জানালেন, অর্থমন্ত্রী আ হম মুস্তফা কামাল।

এর আগে মঙ্গলবার বাংলাদেশ সফর করেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেনারেল ওয়েই ফিংহে। তিনি রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতকালে বলেছেন, তার দেশ করোনা মোকবেলায় বাংলাদেশকে সার্বিক সহযোগিতা করতে চায়। এসময় রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেন, বাংলাদেশ-চীন যৌথভাবে করোনা ভ্যাকসিন উৎপাদনে আগ্রহী। তার পরদিনই রাশিয়া-চীনের করোনা ভ্যাকসিন উৎপাদনে নীতিগত সিদ্ধান্ত দিল মন্ত্রীসভা কমিটি।

অর্থমন্ত্রী বলেন, টিকা কেনা এবং বিকল্প সোর্স থেকেও সংগ্রহের চেষ্টা চলছে। প্রথম সোর্সও আমরা বাতিল করিনি। বিকল্প হিসেবে রাশিয়া ও চীনের প্রযুক্তি কিনে স্পুটনিক-ভি ও ‘সিনোভ্যাক’ বাংলাদেশে উৎপাদনে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটি। অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অর্থনৈতিক বিষয়ক সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ভার্চ্যুয়াল বৈঠকে প্রস্তাব দুটো অনুমোদন পায়।

বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. শাহিদা আক্তার জানান, জরুরি প্রয়োজনে রাশিয়ার স্পুটনিক-ভি ও চীনের ‘সিনোফার্ম’ থেকে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি অনুসরণ করে বাংলাদেশে ভ্যাকসিন উৎপাদনের প্রস্তাবটি নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে করোনা ভ্যাকসিন উৎপানের বিষয় নিয়ে রাশিয়া এবং চীনের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।

কারিগরি ও পরামর্শক কমিটির সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। তারাও আলোচনা করেছেন। তারপরই এ বিষয়ে সম্মতি দেওয়া হয়েছে। খুব শিগগিরই কার্যক্রম শুরু হবে। বাংলাদেশ ও চীন দু’পক্ষই এটি উৎপাদনে একমত হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব বাংলাদেশে টিকা উৎপাদন শুরুর তাগিদ দেওয়া হয়েছে।