ঢাকা ০৭:০৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৫, ১৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়নটকে দুটো স্কুল বাস উপহার দিল ভারত

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৩:৪৬:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ জুলাই ২০২০ ৪৯০ বার পড়া হয়েছে
ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ভয়েস রিপোর্ট
১৯৬৪ সালে (বাংলা ১৩৭১ সাল) ইটপাথরের রাজধানী রমনার বটমূলে বাংলা নববর্ষ পহেলা বৈশাখের প্রভাতী অনুষ্ঠান আয়োজন করে ছায়ানট। বাংলানববর্ষের সেই অনুষ্ঠানটিই বাঙালির সাংস্কৃতিক অঙ্গনকে সমৃদ্ধ করেছে। ছায়ানটের রয়েছে দীর্ঘ ইতিহাস। রমনার বটমূলে বাংলা নববর্ষ পালন অনুষ্ঠানটি জাতীয় উৎসবে পরিণত হয়েছে। ছায়ানট রবীন্দ্র জন্মশতবাষির্কী, ২৫শে বৈশাখ, ২২শে শ্রাবণ, শারদোৎসব ও বসন্তোৎসব গুরুত্বের সঙ্গে পালন করে আসছে। সাংস্কৃতিক শিক্ষার পাশাপাশি সাধারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নালন্দা স্কুলটিও ছায়ানটের গর্বিত একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। রাজধানীর ধানমন্ডিতে ছায়ানট এক নামেই সবার চেনা। এই ছায়ানটকে দুটো স্কুল বাস উপহার দিলো ভারত।
বুধবার ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ছায়ানট পরিচালিত নালন্দা উচ্চ বিদ্যালয়কে দুটো স্কুল বাস হস্তান্তর করেন ভারতীয় হাইকমিশনার মিস রিভা গাঙ্গুলি দাশ।
ছায়ানটের নির্বাহী সভাপতি ড. সারওয়ার আলী, সহ-সভাপতি খায়রুল আনাম শাকিল, সাধারণ সম্পাদক মিস লাইসা আহমেদ লিসা এবং নালন্দা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মিস সুমনা বিশ্বাস এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন। বাস দুটি স্কুলের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ এবং ছাত্রছাত্রীদের প্রতিদিনের স্কুলে যাতায়াতের সুবিধা নিশ্চিত করবে। অনুষ্ঠানে কথা বলতে গিয়ে ভারতীয় হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলি দাশ বলেন, কঠোর পরিশ্রম ও আত্মনিয়োগের মধ্য দিয়ে ছায়ানট গত কয়েক দশক ধরে সাংস্কৃতিক ও বাঙালি ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রেখেছে। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে শিল্পীদের অনুশীলন, উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণ দিয়ে ছায়ানট বাংলাদেশী সমাজ এবং মূল্যবোধকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে চলেছে। রিভা গাঙ্গুলি বলেন, ছায়ানটের সঙ্গে এই বন্ধুত্বকে আমরা সম্মান করি এবং তাদের সহযোগিতায় আসতে পেরে নিজেদের সৌভাগ্যবান বলে মনে করি। নালন্দা উচ্চ বিদ্যালয় এবং ছায়ানট এই উপহারের জন্য ভারতীয় হাইকমিশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, হাইকমিশনের এই অবদান তাঁদের কার্যক্রম পরিচালনায় অনেক খানি সহায়ক হবে।
ছায়ানটের ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৯৬১ সালে রবীন্দ্র-জন্মশতবার্ষিকী উৎযাপনের পর কয়েকজন সংগঠক একটি প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক সংগঠন প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন। তাদের মধ্যে মোখলেসুর রহমান (সিধু ভাই নামে পরিচিত), শামসুন্নাহার রহমান, সুফিয়া কামাল, ওয়াহিদুল হক অন্যতম। সাঈদুল হাসানের প্রস্তাবে সংঠনটির নামকরণ করা হয় ছায়ানট।
১৯৬১ সালে সুফিয়া কামালকে সভাপতি আর ফরিদা হাসানকে সম্পাদক করে প্রথম কমিটি গঠিত হয়। সহ-সভাপতি জহুর হোসেন চৌধুরী, সাঈদুল হাসান। সহ-সম্পাদক সাইফুদ্দীন আহমদ মানিক, মিজানুর রহমান ছানা। কোষাধ্যক্ষ পদে মোখলেসুর রহমান ও সদস্য ছিলেন কামাল লোহানী, ওয়াহিদুল হক, সনজীদা খাতুন, আহমেদুর রহমান প্রমুখ। ১৯৬১ সালে ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউট মিলনায়তনে ছায়ানটের প্রথম অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৬৩ সালে সনজীদা খাতুনের উদ্যোগে বাংলা একাডেমীর বারান্দায় সঙ্গীত শেখার ক্লাস শুরু হয়। একই বছর ছায়ানট সঙ্গীত বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। যা পহেলা বৈশাখ (১৩৭০ বঙ্গাব্দে) ওস্তাদ আয়েত আলী খান উদ্বোধন করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়নটকে দুটো স্কুল বাস উপহার দিল ভারত

আপডেট সময় : ০৩:৪৬:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ জুলাই ২০২০

ভয়েস রিপোর্ট
১৯৬৪ সালে (বাংলা ১৩৭১ সাল) ইটপাথরের রাজধানী রমনার বটমূলে বাংলা নববর্ষ পহেলা বৈশাখের প্রভাতী অনুষ্ঠান আয়োজন করে ছায়ানট। বাংলানববর্ষের সেই অনুষ্ঠানটিই বাঙালির সাংস্কৃতিক অঙ্গনকে সমৃদ্ধ করেছে। ছায়ানটের রয়েছে দীর্ঘ ইতিহাস। রমনার বটমূলে বাংলা নববর্ষ পালন অনুষ্ঠানটি জাতীয় উৎসবে পরিণত হয়েছে। ছায়ানট রবীন্দ্র জন্মশতবাষির্কী, ২৫শে বৈশাখ, ২২শে শ্রাবণ, শারদোৎসব ও বসন্তোৎসব গুরুত্বের সঙ্গে পালন করে আসছে। সাংস্কৃতিক শিক্ষার পাশাপাশি সাধারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নালন্দা স্কুলটিও ছায়ানটের গর্বিত একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। রাজধানীর ধানমন্ডিতে ছায়ানট এক নামেই সবার চেনা। এই ছায়ানটকে দুটো স্কুল বাস উপহার দিলো ভারত।
বুধবার ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ছায়ানট পরিচালিত নালন্দা উচ্চ বিদ্যালয়কে দুটো স্কুল বাস হস্তান্তর করেন ভারতীয় হাইকমিশনার মিস রিভা গাঙ্গুলি দাশ।
ছায়ানটের নির্বাহী সভাপতি ড. সারওয়ার আলী, সহ-সভাপতি খায়রুল আনাম শাকিল, সাধারণ সম্পাদক মিস লাইসা আহমেদ লিসা এবং নালন্দা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মিস সুমনা বিশ্বাস এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন। বাস দুটি স্কুলের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ এবং ছাত্রছাত্রীদের প্রতিদিনের স্কুলে যাতায়াতের সুবিধা নিশ্চিত করবে। অনুষ্ঠানে কথা বলতে গিয়ে ভারতীয় হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলি দাশ বলেন, কঠোর পরিশ্রম ও আত্মনিয়োগের মধ্য দিয়ে ছায়ানট গত কয়েক দশক ধরে সাংস্কৃতিক ও বাঙালি ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রেখেছে। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে শিল্পীদের অনুশীলন, উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণ দিয়ে ছায়ানট বাংলাদেশী সমাজ এবং মূল্যবোধকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে চলেছে। রিভা গাঙ্গুলি বলেন, ছায়ানটের সঙ্গে এই বন্ধুত্বকে আমরা সম্মান করি এবং তাদের সহযোগিতায় আসতে পেরে নিজেদের সৌভাগ্যবান বলে মনে করি। নালন্দা উচ্চ বিদ্যালয় এবং ছায়ানট এই উপহারের জন্য ভারতীয় হাইকমিশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, হাইকমিশনের এই অবদান তাঁদের কার্যক্রম পরিচালনায় অনেক খানি সহায়ক হবে।
ছায়ানটের ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৯৬১ সালে রবীন্দ্র-জন্মশতবার্ষিকী উৎযাপনের পর কয়েকজন সংগঠক একটি প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক সংগঠন প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন। তাদের মধ্যে মোখলেসুর রহমান (সিধু ভাই নামে পরিচিত), শামসুন্নাহার রহমান, সুফিয়া কামাল, ওয়াহিদুল হক অন্যতম। সাঈদুল হাসানের প্রস্তাবে সংঠনটির নামকরণ করা হয় ছায়ানট।
১৯৬১ সালে সুফিয়া কামালকে সভাপতি আর ফরিদা হাসানকে সম্পাদক করে প্রথম কমিটি গঠিত হয়। সহ-সভাপতি জহুর হোসেন চৌধুরী, সাঈদুল হাসান। সহ-সম্পাদক সাইফুদ্দীন আহমদ মানিক, মিজানুর রহমান ছানা। কোষাধ্যক্ষ পদে মোখলেসুর রহমান ও সদস্য ছিলেন কামাল লোহানী, ওয়াহিদুল হক, সনজীদা খাতুন, আহমেদুর রহমান প্রমুখ। ১৯৬১ সালে ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউট মিলনায়তনে ছায়ানটের প্রথম অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৬৩ সালে সনজীদা খাতুনের উদ্যোগে বাংলা একাডেমীর বারান্দায় সঙ্গীত শেখার ক্লাস শুরু হয়। একই বছর ছায়ানট সঙ্গীত বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। যা পহেলা বৈশাখ (১৩৭০ বঙ্গাব্দে) ওস্তাদ আয়েত আলী খান উদ্বোধন করেন।