ঢাকা ০১:০৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫, ৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

একদিনে ২০১ জনের মৃত্যু, প্রত্যন্ত অঞ্চলে গোষ্ঠী সংক্রমণের মারাত্মকরূপ

ভয়েস রিপোর্ট
  • আপডেট সময় : ০৮:৫৮:২৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ জুলাই ২০২১ ২১৪ বার পড়া হয়েছে
ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ছবি সংগ্রহ

বাংলাদেশের প্রত্যান্ত থাবা বসিয়েছে করোনা। রীতিমত সেখানে গোষ্ঠী সংক্রসণ দেখা দিয়েছে। সীমান্ত জেলা যশোরে হাসপাতালে শয্যা নেই। বারান্দা, ভ্যান এমনকি গাছতলায় টেবিলের ওপর রেখে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে করোনা আক্রান্তদের। চিকিৎসক রোগী সামলাতে হিশশিম খাচ্ছেন। রিনা খাতুন (৫৫) উপসর্গ নিয়ে সোমবার রাতে ভর্তি হন যশোর জেনারেল হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে।

নিয়মানুযায়ী তাকে করোনা ওয়ার্ডের ইয়োলো জোনে থাকার কথা। কিন্তু সেখানকার শয্যা তো দূরের কথা বারান্দায়ও জায়গা নেই। নিরুপায় হয়ে স্বজনরা তাকে করোনা ওয়ার্ডের বাইরে নমুনা সংগ্রহের কাজে রাখা টেবিলের উপর রাখেন।

এই অবস্থায় একদিনে ২০১ জনের মৃত্যু দেখলো বাংলাদেশ। রীতিমত মৃত্যুর মিছিল! আক্রান্ত ১১ হাজার ১৬২জন! রাত পোহালেই ভয়ঙ্কর চিত্রের সঙ্গে পরিচিত হচ্ছে মানুষ। বাতাসের লাশের গন্ধ! স্পর্শ বিহীন এই যাত্রায় আপনজনেরা যন্ত্রণাবিদ্ধ।

মহামারির হঠাৎ এই রুদ্রমূর্তি দেশজুড়ে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। বার বার চোখের সামনে ভেসে ওঠছে ভারতের গণচিতা আর মানুষের আহাজারীর দৃশ্য। পরিস্থিতি দিন দিন খারাপের দিকেই এগুচ্ছে। আ্রকান্ত ও মৃত্যুর দিক দিয়ে খুলনা ও ঢাকা এগিয়ে।

বিশ্ব দৃশ্যপট একই। তারপরও  অর্থনৈতিক উত্থানের একটি শিল্পসমৃদ্ধ দেশে হঠাৎ অজেনা শত্রুর আক্রামণে সবকিছু লন্ডভন্ড। বাংলাদেশে করোনা এমন কামড় বসাতে পারে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এমন সাবধান বার্তা বেশ আগে থেকেই দিয়ে আসছিলেন। তারপরও মানুষের নিয়ম ভঙ্গের প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছে। সাধারণ মানুষের এখনও চৈতন্য ফিরে এসেছে বলে মনে হয় না। ফলে সরকারকে কঠোর লকডাউনের পথে হাটতে হয়েছে।

বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ২০১ জন মারা যাবার তথ্য নিশ্চিত করে বলেছে, গত ৫ জুলাই সর্বোচ্চ ১৬৪ জনের মৃত্যুর হয়েছিলো। পর দিন ১৬৩ জন। এবারে ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে একদিনে মৃত্যু দু’শোর ঘর পার করলো। এই ২০১ জনের মৃত্যু নিয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ালো ১৫ হাজার ৫৯৩ জন।

একই সময়ে ১১ হাজার ১৬২ জন করোনা শনাক্ত হয়েছেন। যা নিয়ে শনাক্তর সংখ্যা পৌছালো ৯ লাখ ৭৭ হাজার ৫৬৮ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৫ হাজার ৯৮৭ জন। এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৮ লাখ ৫০ হাজার ৫০২ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৫ হাজার ৬৩৯টি নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার ৩১ দশমিক ৩২ শতাংশ।

মোট শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ৩১ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৭ শতাংশ আর শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যু হার ১ দশমিক ৬০ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ২০১ জনের মধ্যে পুরুষ ১১৯ জন আর নারী ৮২ জন। এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে পুরুষ মারা গেলেন ১১ হাজার দুই জন আর নারী মারা গেলেন চার হাজার ৫৯১ জন।

২০১ জনের মধ্যে খুলনায় মারা গিয়েছে সর্বোচ্চ ৬৬ এবং ঢাকায় ৫৮জন। চট্টগ্রাম বিভাগের ২১ জন, রাজশাহী বিভাগের ১৮ জন, খুলনা বিভাগের ৬৬ জন, বরিশাল বিভাগের সাতজন, সিলেট বিভাগের নয়জন, রংপুর বিভাগের ১৪ জন আর ময়মনসিংহ বিভাগের রয়েছেন আটজন।

এর মধ্যে সরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন ১৬৫ জন, বেসরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন ২৩ জন, বাড়িতে মারা গেছেন ১২ জন আর হাসপাতালে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে একজনকে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

একদিনে ২০১ জনের মৃত্যু, প্রত্যন্ত অঞ্চলে গোষ্ঠী সংক্রমণের মারাত্মকরূপ

আপডেট সময় : ০৮:৫৮:২৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ জুলাই ২০২১

ছবি সংগ্রহ

বাংলাদেশের প্রত্যান্ত থাবা বসিয়েছে করোনা। রীতিমত সেখানে গোষ্ঠী সংক্রসণ দেখা দিয়েছে। সীমান্ত জেলা যশোরে হাসপাতালে শয্যা নেই। বারান্দা, ভ্যান এমনকি গাছতলায় টেবিলের ওপর রেখে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে করোনা আক্রান্তদের। চিকিৎসক রোগী সামলাতে হিশশিম খাচ্ছেন। রিনা খাতুন (৫৫) উপসর্গ নিয়ে সোমবার রাতে ভর্তি হন যশোর জেনারেল হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে।

নিয়মানুযায়ী তাকে করোনা ওয়ার্ডের ইয়োলো জোনে থাকার কথা। কিন্তু সেখানকার শয্যা তো দূরের কথা বারান্দায়ও জায়গা নেই। নিরুপায় হয়ে স্বজনরা তাকে করোনা ওয়ার্ডের বাইরে নমুনা সংগ্রহের কাজে রাখা টেবিলের উপর রাখেন।

এই অবস্থায় একদিনে ২০১ জনের মৃত্যু দেখলো বাংলাদেশ। রীতিমত মৃত্যুর মিছিল! আক্রান্ত ১১ হাজার ১৬২জন! রাত পোহালেই ভয়ঙ্কর চিত্রের সঙ্গে পরিচিত হচ্ছে মানুষ। বাতাসের লাশের গন্ধ! স্পর্শ বিহীন এই যাত্রায় আপনজনেরা যন্ত্রণাবিদ্ধ।

মহামারির হঠাৎ এই রুদ্রমূর্তি দেশজুড়ে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। বার বার চোখের সামনে ভেসে ওঠছে ভারতের গণচিতা আর মানুষের আহাজারীর দৃশ্য। পরিস্থিতি দিন দিন খারাপের দিকেই এগুচ্ছে। আ্রকান্ত ও মৃত্যুর দিক দিয়ে খুলনা ও ঢাকা এগিয়ে।

বিশ্ব দৃশ্যপট একই। তারপরও  অর্থনৈতিক উত্থানের একটি শিল্পসমৃদ্ধ দেশে হঠাৎ অজেনা শত্রুর আক্রামণে সবকিছু লন্ডভন্ড। বাংলাদেশে করোনা এমন কামড় বসাতে পারে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এমন সাবধান বার্তা বেশ আগে থেকেই দিয়ে আসছিলেন। তারপরও মানুষের নিয়ম ভঙ্গের প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছে। সাধারণ মানুষের এখনও চৈতন্য ফিরে এসেছে বলে মনে হয় না। ফলে সরকারকে কঠোর লকডাউনের পথে হাটতে হয়েছে।

বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ২০১ জন মারা যাবার তথ্য নিশ্চিত করে বলেছে, গত ৫ জুলাই সর্বোচ্চ ১৬৪ জনের মৃত্যুর হয়েছিলো। পর দিন ১৬৩ জন। এবারে ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে একদিনে মৃত্যু দু’শোর ঘর পার করলো। এই ২০১ জনের মৃত্যু নিয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ালো ১৫ হাজার ৫৯৩ জন।

একই সময়ে ১১ হাজার ১৬২ জন করোনা শনাক্ত হয়েছেন। যা নিয়ে শনাক্তর সংখ্যা পৌছালো ৯ লাখ ৭৭ হাজার ৫৬৮ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৫ হাজার ৯৮৭ জন। এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৮ লাখ ৫০ হাজার ৫০২ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৫ হাজার ৬৩৯টি নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার ৩১ দশমিক ৩২ শতাংশ।

মোট শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ৩১ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৭ শতাংশ আর শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যু হার ১ দশমিক ৬০ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ২০১ জনের মধ্যে পুরুষ ১১৯ জন আর নারী ৮২ জন। এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে পুরুষ মারা গেলেন ১১ হাজার দুই জন আর নারী মারা গেলেন চার হাজার ৫৯১ জন।

২০১ জনের মধ্যে খুলনায় মারা গিয়েছে সর্বোচ্চ ৬৬ এবং ঢাকায় ৫৮জন। চট্টগ্রাম বিভাগের ২১ জন, রাজশাহী বিভাগের ১৮ জন, খুলনা বিভাগের ৬৬ জন, বরিশাল বিভাগের সাতজন, সিলেট বিভাগের নয়জন, রংপুর বিভাগের ১৪ জন আর ময়মনসিংহ বিভাগের রয়েছেন আটজন।

এর মধ্যে সরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন ১৬৫ জন, বেসরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন ২৩ জন, বাড়িতে মারা গেছেন ১২ জন আর হাসপাতালে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে একজনকে।