জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ঈদে লকডাউন মুক্ত থাকবে কি না তার সব কিছুই নির্ভর করবে পরিস্থিতির ওপর। মানুষকে ঝুঁকিমুক্ত রাখতে কঠোর বিধিনিষেধ দেওয়া হয়েছে। এই সময়ে মানুষ যদি বিধিনিষেধ মেনে চলে, তাহলে সামনে সুফল পাওয়া যাবে। এ জন্য আমাদের সবাইকে সরকারি বিধিনিষেধ মানতে হবে।
করোনার পারদ যে হারে ঊর্ধমুখী, তাতে সামনের দিনগুলোর অবস্থা কি হবে তা এখনই কেউ কারো পক্ষে বলা সম্ভব নয়। রাত পোহালেই চোখের সামনে ভেসে ওঠসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর বিশাল চিত্র।
প্রতিদিনের এসব খবরে মানুষ ক্লান্ত, ভীত। মানুষ আর নিতে পারছে না। প্রকৃতির কাছে অসহায়ত্ব হয়ে পড়েছে মানুষ। দীর্ঘ প্রায় ষোল মাস ধরে দুয়িার মানুষ কেবল মৃত্যু মিছিল দেখেছে।
আপনজনকে স্পর্শ করা থেকেও বঞ্চিত হয়েছে হাজারো মানুষ। চোখের সামনে বাবা-মা আদরের সন্তান, মায়ের বুক খালি করে এই শব যাত্রা আর সহ্য করতে না পেরে অনেকেই মানুষিক আঘাতে জর্জরিত।
এই পরিস্থিতি থেকে কবে মুক্তি মিলবে তা কেউ বলতে পারচে না। সর্ব একটি বাক্যই ধ্বনি-প্রতিধ্বনি হচ্ছে, সাবধান থাকো, নিয়ম মেনে চলো।
চলতি ২০ বা ২১ তারিখে ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে। ঈদের দিন নির্ধারণে ১১ জুলাই বসবে চাঁদ দেখা কমিটি। ২১ জুলাই ঈদ ধরে সরকারি ছুটি ২০-২২ জুলাই (মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার) তিন দিন ধরা হলেও সরকারি ছুটি থাকবে পাঁচ দিন। ছুটিতে কর্মস্থল ত্যাগ করা যাবে কি না, তা নিয়েও আলোচনা চলছে।
বাংলাদেশে এই মুহুর্তে করোনা পরিস্থিতি খুবই নাজুক। মঙ্গলবার ৬ জুলাই করোনায় পনেরো মাসকে ছাপিয়ে গিয়েছে। এদিন আক্রান্তর সংখ্যা সাড়ে ১১ হাজার ছাড়ালো। আর মৃত্যু হয়েছে ১৬৪ জনের।
করোনার রুখতে সরকারের জারি করা বিধি নিষেধের ৬ষ্ঠ দিনে এই ভয়াভহ চিত্র দেখছে বাংলাদেশ। নজির গড়া মৃত্যু ও আক্রান্ত অবস্থায় পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে তা বলা মুশকিল। লকডাউনে অফিস-আদালত, গণপরিবহন, মার্কেট, শপিংমল, দোকানপাট সব কিছুই বন্ধ রাখা হয়েছে।
মোতায়েন করা হয়েছে সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ, বিজিবি, র্যাব ও আনসার। মাঠে কাজ করছে মোবাইল কোর্ট। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে গেলেই জেল বা জরিমানার মুখোমুখি হতে হচ্ছে।
১৪ দিনে কঠোর লকডাউনের মধ্য দিয়ে সংক্রমণ ও মৃত্যু কমিয়ে আনা সম্ভব হলে ঈদের সময়টাতে শিথিলের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। যাতে ব্যবসায়ী, গণপরিবহন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা অন্য পেশার মানুষ আনন্দ-উৎসব করতে পারে।
এই অবস্থা এক সপ্তাহ বা দশ দিন অব্যাহত রেখে হয়তো আবারও কঠোর বিধি-নিষেধ দেওয়া হতে পারে। তবে সবটাই নির্ভর করছে পরিস্থিতির ওপর।