ঢাকা ০৮:৪৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঈদযাত্রায় মহাসড়কে মহাজট, ১০ঘন্টায় পেরুনো যায়নি ৯০ কি. মি. পথ

ঋদ্ধিমান, ঢাকা
  • আপডেট সময় : ১০:৫০:৩২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ জুলাই ২০২১ ২০০ বার পড়া হয়েছে
ভয়েস একাত্তর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সড়ক, মহাসড়ক, ফেরিঘাট সর্বত্র যানজট বাংলার পরিচিত দৃশ্য ছবি সংগৃত

“হকারদের হাকডাক, জল লাগবে জল, কেউ বলছে গরম চা, আদা চা আছে বাবু খেয়ে নিন এক পেয়ালা। শরীরটা হাল্কা হবে। আবার কেউ হাক দিচ্ছে, তিনটি মাস্ক ১০ টাকা ইত্যাদি”

ঢাকার খিলগাঁও থেকে দুই সন্তানসহ পরিবার নিয়ে বৃহস্পতিবার  রাতে প্রাইভেট কারে নাটোরের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়েন রেজাউল করিম। সকাল ১০টায় মুঠো ফোনে কথা বলে জানা গেলো, তারা ঢাকা-টঙ্গাইল মহাসড়কে যানজটের কারণে ঢাকা-আরিচা মহাসড় ধরে এগুলোতে

১২ ঘন্টার যানজটে আটকা থাকার পর ফেরিতে ওঠা সম্ভব হয় : ছবি ও ভিডিও শোভন রিফাত

থাকেন। তার পরিকল্পনা ফেরিতে পদ্মা পারি দিয়ে ফরিদপুর হয়ে পাবনার বুক চিড়ে নাটোরের বাড়ি পৌঁছাবেন। কিন্তু সাকুল্যে ৪ ঘন্টার পথ ১০ঘন্টায় অর্ধেক পথও অতিক্রম করতে পারেননি

রেজাউল। দুই সন্তান ক্লান্ত, স্ত্রীর সুগার। মহাভাবনায় পড়েছেন রেজাউল করিম। তারপর তাকে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে। কারণ সংসারের অনেক দায়িত্ব যে তার ওপরে।

হাজারটা ঝক্কি-ঝামেলা পেরিয়েতো ঈদে বাড়ি ফেরা। এতো পরিচিত দৃশ্য। ঈদযাত্রায়  হাজারো যন্ত্রণাদায়ক সমস্যাগুলোকে লুফে নিয়ে বাড়ি ফেরার আনন্দটুকুই আলাদা। যারা মহাসড়ক ধরে যাবেন, তারা ধরেই নেন যে, তাকে অন্তত ৫ থেকে ১০ ঘন্টা যানজটে আটকে থাকতে হবে।

ভাগ্যক্রমে কখনও কয়েকঘন্টার দুর্ভোগের পরও খালাস মেলে। বাড়ি পৌঁছে স্বজনদের হাসিমুখ দেখার পর পথের ক্লান্তি দূর হয়ে যায়। তখন আর পথের কষ্টের কথা মনেই হয় না। এই হচ্ছে বঙ্গ সন্তানদের ঈদযাত্রার সংক্ষিপ্ত বয়ান।

লকডাউন শিথিলের খবরেই ঘরমুখো মানুষ প্রয়োজনীয় জিনিষপত্রর গোছগাছে ব্যস্ত হয়ে পরেন। তারপর বুধবার মধ্যরাতেই বাড়ির পথে পা বাড়ান অনেকে।

বৃহস্পতিবার চড়া গরমকে তোয়াক্কা না করে পথে নামে মানব জোয়ার। আর শুক্রবার, সেকথা কি বলবো। মধ্যরাত থেকেই মহাসড়কে মহাযানজটের পরিচিত দৃশ্য সঙ্গী হয়। রাত গড়িয়ে ভোরের

আলো ফুটতেই ক্লান্ত চোখ খোলে দেখা যায় মাত্র কয়েক কিলোমিটার পথ অতিক্রম করা সম্ভব হয়েছে। সড়কে গাড়ির মিছিল। পাড়িগুলো চলছে শিশুদের হাটার গতিতে।

এরই মধ্যে হকারদের হাকডাক, জল লাগবে জল, কেউ বলছে গরম চা, আদা চা আছে বাবু খেয়ে নিন এক পেয়ালা। শরীরটা হাল্কা হবে। আবার কেউ হাক দিচ্ছে, তিনটি মাস্ক ১০ টাকা ইত্যাদি।

ঈদের এই সময়টাতে মহাসড়কে নানা ধরণের ভাসমান দোকানীর উপস্থিতি বেড়ে যায়। আর দীর্ঘ যানজটে আটকে থেকে কিছু না কিছুতো প্রয়োজন আছেই।

উত্তরজনপদের হাজার হাজার যানবাহন ঢাকা-টাঙ্গাইল তথা বঙ্গবন্ধু সেতু অভিমুখে প্রায় ২৫ কিলোমিটার জুড়ে যানজটে আটকা পড়ে। বঙ্গবন্ধু সেতুর টোল দিতে সকল যানবাহনকে থামতে হয়। একারণে পেছনে লম্বা হতে থাকে যানজট।

রাতে আরিচা ফেরিঘাটে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে ফেরিপারের অপেক্ষায় হাজারো যানবাহন 

এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইয়াসির আরাফাত সংবাদমাধ্যমকে জানান, বৃহস্পতিবার রাত থেকে মহাসড়কে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি যানবাহন চলাচল করছে। চাপ

বেড়ে যাওয়ায় ধীরগতিতে চলাচল করছে যানবাহন। মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক করতে পুলিশকে হিশশিম খেতে হচ্ছে। তারপরও নিরলসভাবে দায়িত্ব পালন করে চলেছেন তারা।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

ঈদযাত্রায় মহাসড়কে মহাজট, ১০ঘন্টায় পেরুনো যায়নি ৯০ কি. মি. পথ

আপডেট সময় : ১০:৫০:৩২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ জুলাই ২০২১

সড়ক, মহাসড়ক, ফেরিঘাট সর্বত্র যানজট বাংলার পরিচিত দৃশ্য ছবি সংগৃত

“হকারদের হাকডাক, জল লাগবে জল, কেউ বলছে গরম চা, আদা চা আছে বাবু খেয়ে নিন এক পেয়ালা। শরীরটা হাল্কা হবে। আবার কেউ হাক দিচ্ছে, তিনটি মাস্ক ১০ টাকা ইত্যাদি”

ঢাকার খিলগাঁও থেকে দুই সন্তানসহ পরিবার নিয়ে বৃহস্পতিবার  রাতে প্রাইভেট কারে নাটোরের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়েন রেজাউল করিম। সকাল ১০টায় মুঠো ফোনে কথা বলে জানা গেলো, তারা ঢাকা-টঙ্গাইল মহাসড়কে যানজটের কারণে ঢাকা-আরিচা মহাসড় ধরে এগুলোতে

১২ ঘন্টার যানজটে আটকা থাকার পর ফেরিতে ওঠা সম্ভব হয় : ছবি ও ভিডিও শোভন রিফাত

থাকেন। তার পরিকল্পনা ফেরিতে পদ্মা পারি দিয়ে ফরিদপুর হয়ে পাবনার বুক চিড়ে নাটোরের বাড়ি পৌঁছাবেন। কিন্তু সাকুল্যে ৪ ঘন্টার পথ ১০ঘন্টায় অর্ধেক পথও অতিক্রম করতে পারেননি

রেজাউল। দুই সন্তান ক্লান্ত, স্ত্রীর সুগার। মহাভাবনায় পড়েছেন রেজাউল করিম। তারপর তাকে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে। কারণ সংসারের অনেক দায়িত্ব যে তার ওপরে।

হাজারটা ঝক্কি-ঝামেলা পেরিয়েতো ঈদে বাড়ি ফেরা। এতো পরিচিত দৃশ্য। ঈদযাত্রায়  হাজারো যন্ত্রণাদায়ক সমস্যাগুলোকে লুফে নিয়ে বাড়ি ফেরার আনন্দটুকুই আলাদা। যারা মহাসড়ক ধরে যাবেন, তারা ধরেই নেন যে, তাকে অন্তত ৫ থেকে ১০ ঘন্টা যানজটে আটকে থাকতে হবে।

ভাগ্যক্রমে কখনও কয়েকঘন্টার দুর্ভোগের পরও খালাস মেলে। বাড়ি পৌঁছে স্বজনদের হাসিমুখ দেখার পর পথের ক্লান্তি দূর হয়ে যায়। তখন আর পথের কষ্টের কথা মনেই হয় না। এই হচ্ছে বঙ্গ সন্তানদের ঈদযাত্রার সংক্ষিপ্ত বয়ান।

লকডাউন শিথিলের খবরেই ঘরমুখো মানুষ প্রয়োজনীয় জিনিষপত্রর গোছগাছে ব্যস্ত হয়ে পরেন। তারপর বুধবার মধ্যরাতেই বাড়ির পথে পা বাড়ান অনেকে।

বৃহস্পতিবার চড়া গরমকে তোয়াক্কা না করে পথে নামে মানব জোয়ার। আর শুক্রবার, সেকথা কি বলবো। মধ্যরাত থেকেই মহাসড়কে মহাযানজটের পরিচিত দৃশ্য সঙ্গী হয়। রাত গড়িয়ে ভোরের

আলো ফুটতেই ক্লান্ত চোখ খোলে দেখা যায় মাত্র কয়েক কিলোমিটার পথ অতিক্রম করা সম্ভব হয়েছে। সড়কে গাড়ির মিছিল। পাড়িগুলো চলছে শিশুদের হাটার গতিতে।

এরই মধ্যে হকারদের হাকডাক, জল লাগবে জল, কেউ বলছে গরম চা, আদা চা আছে বাবু খেয়ে নিন এক পেয়ালা। শরীরটা হাল্কা হবে। আবার কেউ হাক দিচ্ছে, তিনটি মাস্ক ১০ টাকা ইত্যাদি।

ঈদের এই সময়টাতে মহাসড়কে নানা ধরণের ভাসমান দোকানীর উপস্থিতি বেড়ে যায়। আর দীর্ঘ যানজটে আটকে থেকে কিছু না কিছুতো প্রয়োজন আছেই।

উত্তরজনপদের হাজার হাজার যানবাহন ঢাকা-টাঙ্গাইল তথা বঙ্গবন্ধু সেতু অভিমুখে প্রায় ২৫ কিলোমিটার জুড়ে যানজটে আটকা পড়ে। বঙ্গবন্ধু সেতুর টোল দিতে সকল যানবাহনকে থামতে হয়। একারণে পেছনে লম্বা হতে থাকে যানজট।

রাতে আরিচা ফেরিঘাটে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে ফেরিপারের অপেক্ষায় হাজারো যানবাহন 

এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইয়াসির আরাফাত সংবাদমাধ্যমকে জানান, বৃহস্পতিবার রাত থেকে মহাসড়কে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি যানবাহন চলাচল করছে। চাপ

বেড়ে যাওয়ায় ধীরগতিতে চলাচল করছে যানবাহন। মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক করতে পুলিশকে হিশশিম খেতে হচ্ছে। তারপরও নিরলসভাবে দায়িত্ব পালন করে চলেছেন তারা।