ইচ্ছের বিরুদ্ধে শারীরিক সম্পর্ক করায় স্বামীকে হত্যা
- আপডেট সময় : ১০:৫২:৪৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ এপ্রিল ২০২১ ২৬০ বার পড়া হয়েছে
ছবি: সংগৃহীত
ভয়েস ডিজিটাল ডেস্ক
স্ত্রীর বয়স মাত্র ১৪ বছর। স্বামীর ২৮ বছর। বিয়ে হয়েছিলো পারিবারিকভাবেই। কিন্তু ২৭ দিনের মধ্যেই শীর্ণকায় দেহের মেয়েটি স্বামীকে হত্যার কথা থানা ও আদালতে স্বীকার করেছে। সুঠাম দেহের ছেলেটিকে কি করে হত্যা করতে পারলো মেয়েটি। জানালো কৌশলে শ্বাসরোধ করে।
রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার বিষহরা গ্রামের মঙ্গলবার রাতের ঘটনা। এনিয়ে এলাকায় তোলপাড় চলছে। আদালত মেয়েটিকে কারাগারে পাঠিয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, নিহত হারুনুর রশিদ এলাকার বয়জুল মণ্ডলের ছেলে। মেয়েটি একই উপজেলার ভীমনগর পালশা গ্রামের। স্থানীয় একটি মাদরাসায় অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত মেয়েটি। গত ১৯ মার্চ হারুনের সঙ্গে তার বিয়ে দেয়া হয়। বয়স কম বলে হারুনের গ্রামে কিশোরীর খালার বাড়িতে বিয়ের আয়োজন করা হয়। স্থানীয় একজন কাজী বিয়ে পড়ান।
মোহনপুর থানার ওসি তৌহিদুর রহমান বলেন, অনেকটা জোর করেই মেয়েটির বিয়ে দেয়া হয়েছিল। বিয়ের পর স্বামীর যৌন চাহিদা পূরণ করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে সে। মঙ্গলবার রাতেও স্বামী তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করতে চান। তখন মেয়েটি জানায়, তার শারীরিক সমস্যার কথা। তখন স্ত্রীর গায়ে হাত তোলেন হারুন। পরে গৃহবধূ কৌশলে স্বামীর দুই হাত বেঁধে ফেলে। এরপর পাটের রশি গলায় পেঁচিয়ে ধরে। তাতেই স্বামীর মৃত্যু ঘটে।
ওসি আরও বলেন, স্বামীর হাতে যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েই এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বাল্যবিয়ের শিকার মেয়েটি। মেয়েটির চেয়ে ছেলের শারীরিক গঠন দ্বিগুণ। তারপরও সে স্বামীকে হত্যা করতে পেরেছে বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। এর আগে নিহত হারুনের বাবা মেয়েটির বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মেয়ের বাবা জানান, তারও বাল্য বিয়ে হয়েছিল। বর্তমানে তার বয়স ৩০ বা ৩১ বছর হবে। তার দুই মেয়ে। ১৪ বছরের বড় মেয়েটির বাল্য বিয়ে দেয়া হয়। তার ছোট মেয়েটির বয়স তিন বছর। তবে তিনি (মেয়েটির বাবা) স্বীকার করেন, এই বয়সে মেয়ের বিয়ে দেয়াটাই ঠিক হয়নি।
ঘটনার রাত ৩ টার দিকে শ্বাশুড়ির সঙ্গে সেহরি রান্না শেষে একাই খেতে বসে। শ্বাশুড়ি ছেলেকে ডাকতে বলেন। কিন্তু মেয়েটি যায়নি। তখন হারুনের মা তাকে ডাকতে গিয়ে দেখেন-হারুনের শরীর কম্বল দিয়ে ঢাকা। কম্বল সরিয়ে দেখেন, হারুনের কোন সাড়াশব্দ নেই। এ সময় তাকে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। চিকিৎসক জানান, অনেক আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।
বিষহরা উত্তরপাড়া জামে মসজিদের ঈমাম এবং মোহনপুরের জাহানাবাদ ইউনিয়নের সহকারী কাজী আবুল হোসেন শেখ বলেন, তিনি এই বিয়ে পড়াতে চাননি। এক ভাতিজা এসে পীড়াপীড়ি করায় শুধু কালেমা পড়িয়েছেন। মেয়ের বয়স কম হওয়ায় রেজিস্ট্রি করেননি। ভালাম বইয়েও কিছুই লেখা নেই। তিনি বলেন, বিয়ে পড়ানোটা একটা অন্যায় হয়েছে।